জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ আনুযায়ী ২০২১ শিক্ষাবর্ষে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ বছর। ৫ম শ্রেণি থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ দেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর বয়স ১১ বছরের কম হওয়ায় ভর্তির আবদেন করতে পারছে না তারা।
এমন পরিস্থিতিতে সন্তানদের শিক্ষাজীবন নিয়ে সুশ্চিন্তায় পড়েছেন অভিভাবকরা। ফলে অনেক অভিভাবক জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে ছুটছেন বিভিন্ন দপ্তরে। ছুটছেন জেলা প্রশাসন ও জেলা শিক্ষা অফিসের দ্বারে দ্বারে।
জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) দেশের সকল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনলাইন ও এসএমএস এর মাধ্যমে ভর্তির আবেদন ও ফি প্রদান সংক্রান্ত নিয়মাবলী প্রকাশ করেছে। সে অনুযায়ী গত ১৭ ডিসেম্বর থেকে অনলাইনে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু হয়। আবেদনের সময়সীমা শেষ হবে চলতি মাসের ২৭ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
৩০ ডিসেম্বর অনলাইন লটারির মাধ্যমে জানা যাবে কে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারবে।
বিভিন্ন স্কুল ও কম্পিউটারের দোকানগুলো ঘুরে দেখা ও জানা গেছে, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ আনুযায়ী প্রাথমিকে ভর্তির নূন্যতম বয়স ধরা হয়েছে ছয় বছর। সে হিসেবে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির বয়স ১১ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে।
ফলে প্রাথমিকসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অধিকাংশেরই বয়স ১১ বছর না হওয়ার কারণে অনলাইন ভর্তির আবেদন করতে পরছেন না। আর যারাও করেছেন তাদের আবেদন অনলাইনে গৃহীত হয়নি।
যে কারণে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করে জটিলতা কাটিয়ে সন্তানদের পড়াশোনার ধারবাহিকতা ধরে রাখতে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদে ছুটছেন অভিভাবকরা। এতে অনেক শিক্ষার্থীর লেখাপড়ায় ধারাবাহিকতা ব্যাহত হতে পারে, যা তার পরবর্তী জীবনেও প্রভাব ফেলতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে সন্তানদের ভর্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন তাদের অভিভাবকেরা।
সন্তানদের ভর্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা
অভিভাবকরা জানান, প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি করার সময় তারা তাদের সন্তানদের বয়স কমিয়ে স্কুলে ভর্তি করেছিলেন। কিন্তু এখন ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করতে ১১ বছর ঠিক করায় তাদের সন্তানদের বয়স ১১ বছরের কম হচ্ছে। যে কারণে তাদের সন্তানদের ভর্তির আবদেন গ্রহণ হচ্ছে না। এবারের মতো বয়সের নিয়মনীতি তুলে দিয়ে শিক্ষার্থীরা যাতে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারে সেজন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
অনলাইনে ভর্তির আবেদন করতে অভিভাবকদের ছোটাছুটি
কয়েকজন কম্পিউটার অপারেটরের সাথে কথা বলে জানা যায়, অনলাইনে ভর্তির আবেদন করতে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা তাদের কাছে ছুটে আসছেন। কিন্তু এর মধ্যে প্রায় ৮০ ভাগ শিক্ষার্থীর বয়স ১১ বছরের কম। যে কারণে তাদের আবেদন সফটওয়্যার গ্রহণ করছে না। তাই তাদেরকে নতুন করে জন্ম নিবন্ধন নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে ছুটে যেতে হচ্ছে।
জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ (সংশোধিত ২০১৯) অনুযায়ী ১ম শ্রেণিতে ভর্তির ন্যূনতম বয়স হতে হবে ৬+ বছর এবং সে অনুযায়ী ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর বয়স হতে হবে ন্যূনতম ১১+ বছর।