অভিনেতা আবদুল কাদের আর নেই। শনিবার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
হঠাৎ করে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ক্যান্সার আক্রান্ত আবদুল কাদেরকে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়।
প্রিয় অভিনেতা আবদুল কাদের ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন অনেকদিন ধরে। ক্যান্সার জটিল আকারে ছাড়িয়ে পড়েছিল সারা শরীরে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে তাকে গেল ৮ ডিসেম্বর ভারতের চেন্নাইয়ের ভেলোর শহরের সিএমসি হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চলছিল তার চিকিৎসা। ক্যান্সারের চিকিৎসা গ্রহণ শেষে ভারতের চেন্নাই থেকে দেশে ফিরে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। এরপর তার করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে।
আবদুল কাদেরের বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক। নাটক, বিজ্ঞাপন, চলচ্চিত্র; তিন মাধ্যমেই জনপ্রিয় ছিলেন আবদুল কাদের। তিনি জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র নিয়মিত শিল্পী ছিলেন।
কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের লেখা ‘কোথাও কেউ নেই’ ধারাবাহিক নাটকে বদি চরিত্রে অভিনয় করে পরিচিতি পান তিনি। অভিনয়ের পাশাপাশি বেশ কিছু বিজ্ঞাপনচিত্রেও কাজ করেছিলেন কাদের। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের নাট্যশিল্পী ও নাট্যকারদের একমাত্র সংগঠন টেলিভিশন নাট্যশিল্পী ও নাট্যকার সংসদ টেনাশিনাসের সহসভাপতি।
১৯৫১ সালে মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ী থানার সোনারং গ্রামে জন্ম নেওয়া কাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেওয়ার পর সিঙ্গাইর কলেজ ও লৌহজং কলেজে অধ্যাপনায় নিযুক্ত হন। পরে বিটপী বিজ্ঞাপনী সংস্থায় এক্সিকিউটিভ হিসেবে যোগ দেন। বিটপী ছেড়ে পরে তিনি বাটায় যোগ দেন ১৯৭৯ সালে;সেখানে ছিলেন ৩৫ বছর।
১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ডাকসু নাট্যচক্রের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন কাদের। ১৯৭৩ সাল থেকে থিয়েটার নাট্যগোষ্ঠীর সদস্য এবং চার বছর যুগ্ম-সম্পাদকের ও ছয় বছর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি থিয়েটারের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
তার অভিনীত মঞ্চনাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’, ‘এখনও ক্রীতদাস’, ‘তোমরাই, স্পর্ধা’, ‘দুই বোন’, ‘মেরাজ ফকিরের মা’।
এছাড়া দেশের বাইরে জাপান, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, কলকাতা, দিল্লি, দুবাইয়ের মঞ্চেও তিনি বাংলা নাটকে অভিনয় করেছেন।