প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পড়াশোনা অব্যাহত রাখতে অনলাইনে পাঠ চলমান রয়েছে। করোনা পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। আরেকটু নিয়ন্ত্রণে এলেই আমরা স্কুল-কলেজ সব খুলে দেয়া হবে। তখন ছেলেমেয়েরা আরো সুন্দরভাবে পড়াশোনা করতে পারবে।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনা ও একাদশ জাতীয় সংসদের একাদশ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে সংসদ নেতা একথা বলেন। ১২ কার্যদিবসের এই অধিবেশন আজ শেষ হয়েছে।
সরকারপ্রধান বলেন, আমরা এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছি। তারা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবে। শতভাগ পাসের ব্যবস্থা হয়েছে। এতে স্কুল-কলেজে যেতে না পারার যে দুঃখ ছিল তা দূর হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, টিকা আসার আগে অনেক সমালোচনা, অনেক ব্যঙ্গ হয়েছে। এসবের উত্তর টিকা আসার পর টিকা নিজেই দিয়েছে। টিকা নেয়ার পরও সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নেতারা যত কথাই বলুক, তাদের নেতৃত্বের অভাব রয়েছে। তাদের ওপর থেকে মানুষের আস্থা সরে গেছে। আওয়ামী লীগের কাছ থেকে মানুষ সেবা পেয়েছে, দেশের উন্নয়ন হচ্ছে, মানুষের আস্থা–বিশ্বাস অর্জন করেছে আওয়ামী লীগ। তার প্রতিফলন দেখা গেছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোয়।
প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রাখেন, যাদের গায়ে দুর্নীতির ছাপ, যারা দুর্নীতিতে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, দুর্নীতি, গ্রেনেড হামলা মামলায় যাদের সাজা হয়, তারা কোনো দলের নেতৃত্বে থাকলে জনগণের জন্য কাজ করবে কীভাবে?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১০টা গুন্ডা, ২০টা হোন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা—সে পদ্ধতি এখন আর নেই। ইভিএমে ভোট কারচুপির সুযোগ নেই। স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলোয় ছোটখাটো ঘটনা ছাড়া ভালো ভোট হয়েছে। মানুষ ভোট দিতে পারছে। বিএনপির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যাদের গায়ে হাজার কালির ছিটা, তারা আবার এত বড় কথা বলে কোন মুখে?’
শেখ হাসিনা বলেন, সামরিক আমলে জনগণের ভোট দেওয়ার অধিকার ছিল না। যেটা মিলিটারি শাসকেরা ঠিক করে দিত, সেটাই হতো। রেজাল্টও পরিবর্তন করা হতো।
অতীতে ভোট চুরির অপরাধে সরকারপ্রধানকে পদত্যাগও করতে হয়েছে।
সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে সরকার পদ্মা সেতু করেছে, প্রশংসা তো করলই না, খালেদা জিয়া বলেছিলেন, জোড়াতালির পদ্মা সেতুতে কেউ উঠবেন না।
সেতুতে না উঠে নৌপথে যেতে হলে নৌকাতেই উঠতে হবে। প্রধানমন্ত্রী অনেকটা হাস্যরস করে বলেন, ‘উপায় নাই, নৌকায়ই চড়তে হবে। আমাদের নৌকা অনেক বড়। সবাইকে নেব। কিন্তু বেছে নেব। কেউ যেন নৌকা ফুটো করতে না পারে।’
বিভিন্ন খাতে উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১২ বছর সরকার একটানা ক্ষমতায় থাকায় উন্নয়নকাজ দৃশ্যমান হয়েছে। একসময় ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে বাংলাদেশ চলত। একেকটা দলের একেকটা নীতি আছে। বিএনপি বলেছিল, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভালো না। বিদেশ থেকে সাহায্য পাওয়া যাবে না। অনেক প্রশ্ন তারা করেন, সমালোচনা করেন। আয়নায় মনে হয় ভালো করে চেহারা দেখেন না। আয়না দেখেন নিশ্চয়ই সেটা মেকআপের জন্য। কিন্তু নিজেদের কাজগুলো দেখেন না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার দেশকে নিজ পায়ে দাঁড় করাতে চেয়েছে। সেটা পেরেছে। জনগণ ভোট দিয়েছে, তাদের মর্যাদা রক্ষা করা, সেবা করা সরকারের দায়িত্ব। শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববাসী বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে। শুধু দেশের ভেতরে প্রশংসা নেই।
বিএনপির জন্মগত স্বভাব গুজব রটানো। তারা সেটা করুক, সরকার কাজ করে যাবে। কথা বলুক, কথা পেটে থাকলে পেট গুড়গুড় করবে।